"BD News Stand- Your One-Stop Destination for the Latest News, Insights, and Updates from Bangladesh"
Sponsored ads go below
Wednesday, March 10, 2021
এবারের ফাল্গুনী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে মুগ্ধ করল, কিন্তু পরীক্ষায় পাশের দুশ্চিন্তা অবশেষে মলিন করে দিল ফাল্গুনী কে
এবারের ফাল্গুনী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে মুগ্ধ করল, কিন্তু পরীক্ষায় পাশের দুশ্চিন্তা অবশেষে মলিন করে দিল ফাল্গুনী কে।
জাহিদুল ইসলাম,10-03-2021,10.00 পিএম
মহাখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে টেকনিক্যাল মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি বাসের জন্য। কিছুক্ষন পড় বৈশাখী বাস পেলাম। বাসে উঠার পড়ে দেখতে পেলাম, বই আর এ্যাডমিট কাডের ফাইল হাতে নিয়ে অধিকাংশ সিটেই ছাত্র-ছাত্রী। জিজ্ঞাসা করে জানতে পাড়লাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের পরীক্ষা চলছে। সবাই অধিভুক্ত সরকারী বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী। সময় তখন দুপুড় 1.30 পিএম। পরীক্ষা চলাকালীন সময় এর আগে কখনো এমন ভালোভাবে বাসে উঠতে পাড়ি নাই। বাস ও রাস্তার মুক্ত পরিবেশ দেখে খুব ভালো লাগলো।
সিটে বসে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলাম, জিন্সের লেগিন্স ও হলুদ রঙের ফতুয়া পড়ে এ্যাডমিট কাডের ফাইলের উপর বই রেখে পড়ছে ফাল্গুনী। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। কিছুক্ষন পড় আমার অশান্ত মন টা শান্ত ঽল।
করোনাকালীন সময়ের দীর্ঘ সময় ঢাকার বাইরে কেটেছে আমার। একাকী চলতে চলতে জীবনটাই যেন একাকী হয়ে গেছে। নিজের অজান্তেই অনেক কিছু হারিয়ে গিয়েছে। বন্ধু-বান্ধবী, ছেলে-মিয়ের মধ্যে কখনো ভেদাভেদ করি নাই। রাত-দিন, গীষ্ম-বর্ষা আমার কাছে যেন একই বিষয় ছিল। ফাল্গুনী আবার মনে করিয়ে দিল কোটি বছর ধরে আমি তোমার সাথে।আজ কেন ভুলে রবে।
খুব তাড়াতাড়ি বাস তিতুমীর কলেজে গিয়ে পৌঁছল। প্রাণী বিজ্ঞান বিষয়ের বইটা বন্ধ করে ফাল্গুনী বাস থেকে নামল। এটাই ছিল ফাল্গুনীর সাথে আমার প্রথম দেখা। কিছু বলার ইচ্ছা হয়েও হল না।
বিকেল 5.30 পিএম । আমি তিতুমীর কলেজের সামনে বৈশাখী বাসে। এবার সাভার আসার জন্য সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছি। বাসের ভেতর এদিক ওদিক তাকানোর জায়গা নেই। কিছুক্ষন পড় যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম, সেই সিট টি ফাঁকা হল।বসার পড়ে দেখলাম ব্যাগ হাতের উপর নিয়ে বসে আছে একটি মিয়ে। কিছু না বলেই বসে আছি। হঠাৎ মিয়েটা ব্যাগের উপর মাথা রেখে ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করল। কিছুক্ষন পড় শান্ত হয়ে যখন ঠিক ভাবে বসল তখন জিজ্ঞাসা করে জানতে পাড়লাম সে পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার সময় দুই ঘন্টা হওয়ায় সে খাতা পাওয়া, এ্যাডমিট কার্ডের ডিটেইল্স লেখা বাবদ 30 মিনিট বাদ দিয়ে প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় পেয়েছে মাত্র 1.30 মিনিট। আর এই সময়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করে 45 মার্কের উত্তর দিতে পেড়েছে। সময় থাকলে আরো বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে পাড়ত। সরকারী বাঙলা কলেজের কেমিষ্টি ডিপার্টমেন্টের সেই রিমি নামের মিয়েটি আমার পরিচয় পেয়ে পরিচয় দিলেও ছবি উঠাতে আপত্তি করল।
সাংবাদিক হিসেবে আমার পরিচয় পাওয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলল ভাই আমরা দুর্বল ছাত্র, এই সময়ে পাশ করা সম্ভব না। আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত না, নিয়ম মেনে পরীক্ষায় উপস্থিত হয়েছি।
তবে সবার মুখেই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা। সবাই বলছিল এই সময়েও পরীক্ষা গ্রহনের ব্যবস্থার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে ধন্যবাদ। আমি তাদের এই অভিব্যক্তি শুনে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
সাভার আর গেলাম না। কিছুক্ষনের জন্য টেকনিক্যাল নামলাম। পড়ন্ত বিকেলের শেষে আর সন্ধার শুরুতে রাস্তার বাতি গুলো জ্বলছিল। পেছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম, ফাল্গুনী রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। কিন্তু এই বার ফাল্গুনী আমার মনোযোগ নিতে পারল না। সাভার আসার মনোভাব করতেই মনে পড়ল মেয়েটা কে কেন এতো মলিন দেখাচ্ছিল।হ্যাঁ ফাল্গুনীর কথাই বলছি। খুব কষ্ট পেলাম।
সরকারী বাঙলা কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের অভিজ্ঞ শিক্ষক জনাব আর. এফ. ইন স্যার কে ফোন দিলাম। বিভিন্ন কথার মাঝে স্যার বললেন যখন পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তখন সহানুভূতিশীল হওয়া-ই সর্বত্তম। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর মার্ক পকেটে না রেখে খাতায় দেওয়ার পরামর্শ দিলেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment